শীতে শরিরের যত্ন
শীতের সবজিতে এখন বাজার সয়লাব। আমরা জানি, মূল খাদ্যোপাদান হলো ছয়টি। শর্করা, আমিষ প্রােটিন, স্নেহ বা তৈলজাতীয়, ভিটামিন, খনিজ ও পানি। তবে সব খাবারে সব
খাদ্যোপাদান থাকে না। আবার বিদ্যমান উপাদান। সব খাবারে সমানভাবে থাকে না। তাই প্রয়ােজন মেটাতে কোন খাবারে কি খাদ্যোপাদান আছে, তা জানতে হবে এবং সেভাবে খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন- শরীরের শক্তি জোগায় কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং তৈলজাতীয় খাদ্য। আবার শরীর গঠনের জন্য প্রয়ােজন আমিষ। সঙ্গে তৈলজাতীয় খাবার। শরীর কর্মক্ষম রাখতে অবিরাম বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া বিক্রিয়া চলতে থাকে। এতে চলমান রাখতে বিশেষভাবে প্রয়ােজনীয় উপাদান হলাে ভিটামিন ও খনিজ। এর মধ্যে চোখের জন্য বিশেষ প্রয়ােজন ভিটামিন-এ, সি, ই এবং খনিজ লিউটিন। চোখের স্পর্শকাতর স্নায়ু হলো রেটিনা, যা আমাদের দেখতে সাহায্য করে। রেটিনার সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশটির নাম মেকুলা। এটিকে সুস্থ রাখতে লিউটিন হলো এক অপরিহার্য উপাদান। দেখার জন্য রেটিনা সর্বক্ষণ আলাের সঙ্গে এক ধরনের ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় লিপ্ত থাকে। এ রাসায়নিক কর্মকাণ্ডে অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হলাে বিটা-ক্যারােটিন বা ভিটামিন-এ। রেটিনায় আলাের এই কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন বা
ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে একধরনের কেমিক্যাল বর্জ্য বা ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হয়, যা মেকুলার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দ্রত এসব ফ্রি রেডিক্যাল নিস্ক্রীয় ও অপসারিত না হলে স্থায়ীভাবে মেকুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেডিক্যাল নিস্ক্রীয়করণ ও অপসারণের এ জরুরি কাজটি সম্পাদন করে
থাকে ভিটামিন-এ, সি, ই। এগুলাে অ্যান্টি অক্সিডেন্টও বলা হয়ে থাকে। তাই এটি খুবই সঙ্গত, চোখের প্রয়ােজনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা ভিটামিন-এ, সি, ই সংবলিত খাবার এবং সঙ্গে লিউটিন সম্পর্কিত খাবারগুলাে প্রাধান্য দেওয়া। ভিটামিন-এ প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান পালংশাক, লেটুসপাতা, গাজর, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি। আবার লিউটিনসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে পালংশাক, লেটুস পাতা, গাজর, কমলা, বাঁধাকপি ও ফুলকপি উল্লেখযােগ্য। টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, কমলা, লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি পাওয়া যায় । পালংশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টিকুমড়া, কাচা ছােলা ইত্যাদিতে ভিটামিন-ই পাওয়া যায়। এই শীতে খাবারতালিকায় রাখার চেষ্টা করুন এবং পরিবার, বিশেষ করে শিশুদের শাকসবজি গ্রহণে উৎসাহিত করুন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন