লালা মাংস খাবো কি খাবো না?

 লাল মাংস 


রেড মিট নিয়ে নানা প্রচার-অপপ্রচার আমাদের মধ্যে প্রচলিত আছে।  এসব কারণে অনেকে এই মাংস খাদ্যতালিকা থেকে একেবারেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেকে এই মাংস খাবো কিনা খাবো না করি।


 লাল মাংস যা আমরা গরু,ছাগল,মহিষ,ভেড়া,দুম্বা, গাড়ল,এসব প্রাণী থেকে পেয়ে থাকি। এ মাংসে পাওয়া যায়  প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান। সাদা মাংসে মায়োগ্লোবিন নামে এক ধরনের লোহাযুক্ত প্রোটিন কম থাকে।যে কারনে  সাদা দেখায়।আয়রনের রং যেহেতু লাল তাই মায়োগ্লোবিন কম থাকার জন্য সাদা মাংসের রং হালকা থাকে। সাদা মাংস সাধারণত হাস  মুরগি ও টার্কিতে পাওয়া যায়।


লাল মাংসের ভালো ও কারাপ দিক

মাংসের লেগেথাকা  চর্বিতে খারাপ কলস্টেরল বা এলডিএল কলস্টেরল বেশি থাকে ও এই কলস্টেরল শরীরের বিভিন্ন রক্তনালিতে জমা হয়ে রক্তনালিতে ব্লক বা অ্যাথেরোস্কেলোরেটিক প্লাক তৈরি করে। লাল মাংসে এলডিএল বা খারাপ কলস্টেরল বা লেগেথাকা চর্বি সাদা মাংসের তুলনায় বেশি থাকে।


লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কারণ লাল মাংসে লেগেথাকা চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে ও লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংসে পেটের নাড়ির ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি, লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস পাকস্থলী, অগ্নাশয়, খাদ্য নালির ও অন্ত্রের ক্যান্সার করে। ধারণা করা হয় লাল মাংসে যে লএগেথাকা চর্বি বেশি থাকে তা ও লাল মাংস রান্নার সময় যে কার্সিনোজেন তৈরি হয় তা এবং মায়োগ্লোবিনের যে আয়রন থাকে তা কিছু পরিবর্তিত হয়ে যে যৌগ তৈরি করে তা ক্যান্সার হওয়ার জন্য দায়ী।


লাল মাংসের খাদ্য উপাদান এর উপকারি ও ক্ষতিকর দিক নিয়ে যে তথ্য গুলো গবেষক গন দিয়ে থাকেন।তা আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। 


লাল মাংস যা গরুর মাংসে পাওয়া যায় তাতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান থাকে। গরুর মাংসে আয়রন বা লোহা পাওয়া যায় যা অন্ত:সত্ত্বা নারী, বাড়ন্ত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে, এ লোহা বা আয়রন অন্ত্রে সহজে শোষিত হয়। 


এ মাংসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ আছে যা রক্ত তৈরিতে ও স্নায়ু গঠনে ভূমিকা রাখে।

 

গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চর্বি ছাড়া গরুর মাংসে প্রচুর পরিমান প্রোটিন থাকে তাই ৩ আউন্স চর্বি ছাড়া মাংসে মাত্র ১৮০ ক্যালরি শক্তি থাকে কিন্তু ১০টিরও বেশি জরুরি খাদ্য উপাদান থাকে।


১৮ বছর ধরে পরিচালিত ৭২০০০ নারীদের ওপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ওয়েস্টার্নদের মতো বেশি বেশি লাল মাংস, মিষ্টি জাতীয় খাবার ও ফ্রেন্স ফ্রাই বা আলু ভাজা খেতেন তাদের হৃদরোগ, ক্যান্সার ও অন্য কিছু কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।  চর্বি ছাড়া মাংসে অবশ্যই ৩ আউন্স পরিমাণ মাংসে ১০ গ্রামের কম মোট চর্বি, ৪.৫ গ্রামের কম লেগেথাকা চর্বি ও ৯৫ মিলি গ্রামের কম কলস্টেরল থাকতে হবে। তাই গরুর মাংস কেনার সময় খেয়াল রাখবেন মাংসে যেনো চর্বির পরিমাণ কম থাকে।


তাছাড়া যে গরু লালনপালনের সময় শস্যদানা বেশি খাওয়ানো হয় সে সব গরুর মাংসে চর্বি বেশি থাকে ও যে গরু লালনপালনের সময় বিভিন্ন ধরনের ঘাস বেশি খাওয়ানো হয় সেসব গরুর মাংসে চর্বি কম থাকে ও বেশি পরিমাণে হৃদবান্ধব ওমেগা-৩ অসম্পৃক্ত চর্বি বেশি থাকে।

আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঠান্ডা, সর্দি-কাশির উপশমে কী খাবেন

শীতকালের রোগব্যাধি ও প্রতিকার

কচু শাকের স্বাস্থ কথা