পাইলস এ করনীয় ও প্রতিকার
পাইলস এ করনীয় ও প্রতিকার
বর্তমান সময়ে মলদ্বারের বিভিন্ন রোগের মধ্যে পাইলস হল একটি কমন সমস্যা। যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না নিলে এই রোগে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। পাইলসের চিকিৎসা নিয়ে রয়েছে নানা কুসংস্কার।
অনেকে ভুল চিকিৎসা নিয়ে মলদ্বারের কার্য্যকারিতা হারাতে বসেন অনেক সময়। তবে সঠিক চিকিৎসায় পাইলস ভালো হয়।
পাইলস কিঃ
বৃহদান্ত্রের শেষাংশে রেকটামের ভেতরে ও বাইরে থাকা কুশনের মতো একটি রক্তশিরার জালিকা থাকে। যা প্রয়োজন সাপেক্ষে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এতে সমস্যা হলে পাইলস বলে।
যখন পায়ুপথে এসব শিরার সংক্রমণ এবং প্রদাহ হয়, চাপ পড়ে তখন হেমোরয়েডস বা পাইলসে প্রদাহ হয়। যাকে সাধারণ ভাষায় অর্শরোগ বলা হয়।
পাইলসের প্রকারভেদঃ
হেমোরয়েডস বা অর্শরোগের অবস্থান সাধারণত তিন ধরনের যথা-
(১)পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগ
(২)পায়ুপথের অন্ত বা ভেতরের অর্শরোগ
(৩)আবার কখনও দুই অবস্থা একসঙ্গেও থাকতে পারে।
পায়ুপথের ভেতরের অর্শরোগ পাইলস ফুলে মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসাকে ৪টি পর্যায় ভাগ করা হয়।
১.প্রথম পর্যায়ঃ
পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে না বা প্রলেপস হয় না।
২.দ্বিতীয় পর্যায়ঃ
পায়খানার পর পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে এবং তারপর আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যায়।
৩.তৃতীয় পর্যায়ঃ
পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে এবং নিজে ঠিক করতে হয়।
৪.চতুর্থ পযার্য়ঃ
পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে বা প্রলেপস হয়ে এবং তা আর নিজে ঠিক করা যায় না।
পাইলসের কারণঃ
পাইলসের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে
১. দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিণ্যে ভোগা।
২.পুরনো ডায়রিয়া।
৩.মলত্যাগে দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা।
৪. দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা।
৫.পারিবারিক ইতিহাস।
৬.।আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া
৭.ভারি মালপত্র বহন করা।
৮স্থুলতা, কায়িক শ্রম কম করা।
৯. যকৃত রোগ বা লিভার সিরোসিস ইত্যাদি কারণে রোগের আশংকা বেড়ে যায়। সর্বোপরি পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমে কোনো ভাল্ব না থাকায় উপরিউক্ত যে কোনো কারণে পায়ু অঞ্চলে শিরাগুলোতে চাপের ফলে পাইলস সৃষ্টি হয়।
পাইলসের লক্ষণঃ
অর্শরোগে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হচ্ছে
প্রথম পর্যায়েঃ
পায়ুপথের অন্ত্র বা ভেতরের অর্শরোগে সাধারণত তেমন কোনো ব্যথা বেদনা, অস্বস্তি থাকে না।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়েঃ
পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগে পায়ুপথ চুলকায়, বসলে ব্যথা করে, পায়খানার সঙ্গে টকটকে লাল রক্ত দেখা যায় বা শৌচ করা টিস্যুতে তাজা রক্ত লেগে থাকে, মলত্যাগে ব্যথা লাগা, পায়ুর চারপাশে এক বা একের অধিক থোকা থোকা ফোলা থাকে।
প্রতিকার
১.বেশী করে শাক সবজি খেতে হবে।
২.আশ জাতীয় খাবার খেতে হবে।
৩.পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করতে হবে।
৪.গরু খাসি বা রেডমিট খাওয়া বাদ দিতে হবে।
৫.বেশি সময় বসা পরিহার করতে হবে।
৬.অনেক্ষন দাড়িয়ে থাকা পরিহার করতে হবে।
৭.নিয়মিত খাবারের অব্যাস করতে হবে।
সমস্যা হয়ে গেলে ডাক্তার এর কাছে দ্রুত যেতে হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন